স্টেভিয়া চাষ লাভজনক

  ভেষজগুণে সমৃদ্ধ মিষ্টি গাছ স্টেভিয়া সৃষ্টিকর্তার এক অলৌকিক সৃষ্টি। এ গাছ শত শত বছর ধরে প্যারাগুয়ের পাহাড়ি অঞ্চল রিওমন্ডে এলাকায় চাষাবাদ হয়ে এসেছে। প্যারাগুয়ের গুরানী ইন্ডিয়ান নামক উপজাতীয়রা একে বলে কাহিহি অর্থাৎ মধু গাছ। ১৮৮৭ সালে সুইজ উদ্ভিদবিজ্ঞানী ড. এমএস বার্টনি প্রথম স্টেভিয়াকে বিশ্ববাসীর কাছে পরিচয় করিয়ে দেন। পৃথিবীতে স্টেভিয়ার প্রায় ৯০টি জাত এবং ২৪০টি প্রজাতি আছে। এদের মধ্যে স্টিভিয়া রিবাউডিয়ানা প্রজাতির পাতায় সবচেয়ে মিষ্টি উপাদান রিবাউডিওসাইড যৌগটি রয়েছে।

স্টেভিয়া গাছের সবুজ পাতাই মিষ্টি উপাদানের উৎস। চিনির চেয়ে স্টেভিয়ার পাতা ৩০-৪০ গুণ বেশি মিষ্টি। স্টেভিয়া পাতা সংগ্রহের পর সূর্যালোকে বা ড্রায়ারের মাধ্যমে শুকান হয়। তারপর ক্রাশ করে পাউডারে পরিণত করা হয়। এক কেজি পাতা শুকিয়ে প্রায় ২০০-৩০০ গ্রাম পাউডার পাওয়া যায়। স্টেভিয়া পাতার ১০০ গ্রাম নির্যাস থেকে ৪০ কেজি চিনির সমপরিমাণ মিষ্টি পাওয়া যায়। প্রসেস করলে মিষ্টির পরিমাণ আরো বেড়ে যায়। পাতা থেকে রিফাইন করা স্টিভিওসাইডের স্বাদ সাদা চিনির মতো এবং সাদা চিনির চেয়ে প্রায় ৪০০ গুণ বেশি মিষ্টি!
স্টেভিয়ার কাঁচা বা শুকনো পাতা সরাসরি চিবিয়ে খাওয়া যায়। প্রতি ১ কেজি খাবার মিষ্টিকরণের জন্য মাত্র ৭.৯ মিলিগ্রাম স্টেভিয়াই যথেষ্ট! এক গ্লাস পানিতে একটি কাঁচাপাতার রস মিশালেই অনেক মিষ্টি হয়ে যায়। খাবার এবং পানীয় দ্রব্যে ব্যবহার করা যায় স্টেভিয়া পাউডার, ট্যাবলেট কিংবা সিরাপ। চা-কফিতে স্টেভিয়ার ব্যবহার বিশ্বব্যাপী। ১ কাপ চায়ে চা চামচের মাত্র ৪ ভাগের ১ ভাগ স্টেভিয়া পাউডারই যথেষ্ট!
ইউরোপিয়ান ফুড সেফটি অথরিটি(EFSA) মানুষের ব্যবহারের জন্য স্টেভিওল গ্লাইকোসাইড ৪ মিলিগ্রাম/কেজি অ্যাডভাইজড ডেইলি ইনটেক(ADI) রেকমেন্ড করে। অর্থাৎ একজন মানুষের দিনে প্রতি কেজি ওজনের জন্য প্রায় ৪ মিলিগ্রাম পরিমাণ স্টেভিয়া(প্রসেসড) কনজিউম করা নিরাপদ। উদাহরণস্বরূপ, ৭০ কেজি ওজনের একজন ব্যক্তির প্রতিদিন ৭০×৪= ২৮০ মিলিগ্রামের বেশি স্টেভিয়া খাওয়া উচিত নয়।
মাত্রাতিরিক্ত স্টেভিয়া খেলে বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (সুয়েলিং, বমি বমি ভাব, ব্যথা, পেশী দুর্বল হওয়া, মাথা ঘোরা, অ্যালার্জি ইত্যাদি) সৃষ্টি হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে স্টেভিয়ার মূত্রবর্ধক ক্রিয়া(Diuretic) আছে। স্টেভিয়া কিডনি রোগে আক্রান্ত রোগীদের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর মতে- 'স্টেভিয়া প্রাকৃতিক সুইটনার তাই মানবশরীরের জন্য নিরাপদ।' স্টেভিয়া পাতায় থাকে খনিজ, বিটা ক্যারোটিন, এন্টিওক্সিডেন্ট ও ভিটামিন। চিনির পরিবর্তে নির্ভয়ে স্টেভিয়া ব্যবহার করতে বলেন চিকিৎসকেরা। ইউকে গভর্নমেন্টের পুষ্টি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মার্গারেট অ্যাশওয়েল গবেষণা করে দেখেছেন- 'স্টেভিয়া কনজিউম করলে স্থূলতা কমে।' স্টেভিয়া পাউডার দিয়ে বানানো মিষ্টান্ন ডায়াবেটিস রোগীরা খেতে পারেন।
১৯৬৪ সালে প্যারাগুয়েতে স্টেভিয়ার বাণিজ্যিক চাষাবাদ শুরু হয়। জাপানে শুরু হয় ১৯৬৮ সালে। অল্পদিনের মধ্যেই ব্রাজিল, কলম্বিয়া, পেরু, চীন, কোরিয়া, আমেরিকা, কানাডা, ইসরাইল, মেক্সিকো, থাইল্যান্ড, মালেশিয়া প্রভৃতি দেশে বাণিজ্যিকভাবে স্টেভিয়ার চাষ শুরু হয়। বর্তমানে চীনে স্টেভিয়ার ব্যাপক চাষ হলেও বাণিজ্যিক ব্যবহারের দিক দিয়ে জাপান বেশি এগিয়ে গেছে। জাপানে প্রায় ৪০ শতাংশ চিনির চাহিদা মেটানো হয় স্টেভিয়া দিয়ে।
Stevia

ক্যান্সার সৃষ্টিকারক হওয়ার কারণে ১৯৭০ এর দশকে জাপান সরকার আর্টিফিশিয়াল সুইটনার নিষিদ্ধ করে। জাপানে ১৯৭৩ সালের দিকে ৪৩ টি রিসার্চ সেন্টারে স্টেভিয়ার চাষ ও প্রাকৃতিক সুইটনার বানানো নিয়ে পরিক্ষা নিরীক্ষা সম্পন্ন হয়। তারপর কিছুদিনের মধ্যেই জাপানি সিজনিং, কোমল পানীয় এবং আইসক্রিমে স্টেভিয়ার ব্যবহার শুরু হয়। জাপানে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরই নিশ্চিত করা হয়েছে যে মানুষের জন্য স্টেভিয়ার ব্যবহার নিরাপদ। বর্তমানে সেখানে কৃত্রিম চিনি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কেমিক্যাল সুইটনারের বদলে তারা স্টেভিয়া ব্যবহার করে।
ভারতে ২০১১ সালে স্টেভিয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। ২০১৫ সালে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়।
কর্পোরেট ইন্ডাস্ট্রি, চিনি কোম্পানি, আর্টিফিশিয়াল সুইটনার কোম্পানি এবং চিনি রপ্তানি নির্ভর কিছু দেশ স্টেভিয়াতে বিষাক্ত পদার্থ রয়েছে বলে বহুদিন অপপ্রচার চালিয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে স্বয়ং USFDA (Food and Drug Administration) এর গবেষণায়ই প্রমাণিত হয়েছে- 'স্টেভিয়াতে কোনো ক্ষতিকারক পদার্থ নেই।' আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি স্টেভিয়াকে নিরাপদ বলে ঘোষণা দিয়েছে।
বেলজিয়ামের ক্যাথলিক ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ইয়ান গ্যোন্স বলেন, "শুধু সুগার লবিই নয় কেমিক্যাল সুইটনার্স কর্পোরেশন গুলোও স্টেভিয়ার অগ্রযাত্রায় ক্ষতির সম্মুখীন হবে৷ অথচ ভোক্তারা চায় ন্যাচারাল সুইটনার্স৷ ইউরোপীয় আইন প্রাকৃতিক খাদ্যপণ্য বাজারে আসতে বাধা দিচ্ছে ফুড সেফটির ছুতোয়৷ টোবাকো লবির মত সুগার লবিও দুর্নীতির আশ্রয় নিচ্ছে৷''
১৯৯১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্টেভিয়া ব্যান করা হয়। স্টেভিয়াকে USFDA নিষিদ্ধ করেছিল একটি ডামি গবেষণার ভিত্তিতে। যেখানে দাবি করা হয়েছিল স্টেভিয়া ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। মনসান্টো এটিকে বাজার থেকে সরিরে রাখার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। স্টেভিয়া যেন অনুমোদন না পায় সেজন্য সুগার ইন্ডাস্ট্রি ব্যাপক লবিং করেছিল। পরবর্তীতে সত্যিকারের গবেষণা প্রকাশিত হলে FDA স্টেভিয়ার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলতে বাধ্য হয়। একটি ফলো-আপ রিসার্চ আগের ডামি গবেষণাকে ভুল প্রমাণ করে। ১৯৯৫ সালে ইউএসএফডিএ স্টেভিয়াকে সুইটনার হিসাবে নয় শুধু নিউট্রিশন সাপ্লিমেন্টারি হিসাবে আমদানি এবং বিক্রি করার অনুমতি দেয়।
২০০৮ সালে স্টেভিয়াকে এফডিএ থেকে GRAS (সর্বসাধারণের জন্য নিরাপদ) স্বীকৃতি এবং মেইনস্ট্রিম মার্কিন ফুড প্রোডাকশনে ব্যবহারের অনুমোদন দেয়া হয়। বর্তমানে স্টেভিয়া দিয়ে সব ধরনের খাবার এবং পানীয় তৈরি হয়। যুক্তরাষ্ট্রের গ্যাটোরেড ফিট, ভিটামিন ওয়াটার জিরো, সোবি লাইফওয়াটার, কোকা-কোলা লাইফ এবং ক্রিস্টাল লাইট সহ আরো অনেক ফুড ও বেভারেজ প্রোডাক্টের উপাদান হিসেবে স্টেভিয়া ব্যবহার হয়।
বিশ্বব্যাপী প্রায় ১৫ কোটি মানুষ চিনির বিকল্প হিসাবে স্টেভিয়া ব্যবহার করে৷ তবে স্টেভিয়া এখনো চিনির স্থান দখল করতে পারেনি৷ ২০১০ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন স্বীকার করে যে স্টেভিয়ার উপাদান স্টিভিওল গ্লাইকোসাইড মানুষের জন্য নিরাপদ এবং ২০১১ সালে স্টেভিয়া ব্যবহারের অনুমোদন দেয়। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন স্টেভিয়াকে পুরোপুরি ছাড়পত্র দিতে গড়িমসি করছে৷ কমার্শিয়াল ইউজের জন্য এখনো আনপ্রসেসড স্টেভিয়া অনুমোদিত নয়।
WHO এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা প্রায় ৩৫০ মিলিয়ন৷ বিশ্বে চিনি কনজিউম হয় প্রায় ১৮০ মিলিয়ন মেট্রিক টন৷ মিষ্টি জাতীয় খাদ্য বিক্রি হয় ৬০ বিলিয়ন ইউরোর সমপরিমাণ৷ বাজারে স্টেভিয়া সহজলভ্য হলে ইউরোপীয় চিনি উৎপাদনকারীদের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে!
স্টেভিয়া পাতায় থাকা স্টেভিওল গ্লাইকোসাইড, রেবাউডিওসাইড-এ, স্টেভিওসাইড, ফ্ল্যাভোনয়েড এবং টেরপেন যৌগগুলো স্টেভিয়ার মিষ্টতা ও ঔষধি গুণের জন্য দায়ী। স্টেভিয়াতে রক্তে গ্লুকোজ লেভেল কমানোর ক্ষমতা রয়েছে। এটি অক্সিডেটিভ স্ট্রেস, মাইক্রোবিয়াল সংক্রমণ এবং স্থূলতা থেকে রক্ষা করে। ইনফ্লামেশন ও টিউমারের বৃদ্ধি থামাতে পারে এবং ক্যান্সার কোষের মৃত্যু ঘটাতে পারে।
স্টেভিয়ার উপাদান ভাসোডিলেটর হিসাবে কাজ করতে পারে, যা রক্তনালীকে শিথিল করে এবং প্রশস্ত করে দেয়। এইভাবে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে স্টেভিয়া। স্টেভিয়া কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করতে পারে, বিশেষ করে ট্রাইগ্লিসারাইড এবং ব্যাড এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা।
ইতিহাসবিদ ব্রিজেট মারিয়া চেস্টারটন বলেছেন, "ডায়াবেটিস আধুনিক রোগে পরিণত হওয়ার আগে স্টেভিয়া ডায়াবেটিসের একটি ওষুধ ছিল"
স্টেভিয়া পাতা—
• ডায়াবেটিস ও ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে
• উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ করে
• যকৃত, অগ্ন্যাশয় ও প্লীহায় পুষ্টি সরবরাহ করে
• অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন নিঃসরণে সহায়তা করে
• ত্বকের ক্ষত নিরাময় করে
• ত্বকের কোমলতা এবং লাবণ্য বাড়ায়
• দাঁতের ক্ষয় রোধ করে
• ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া দমন করে
• খাদ্য হজমে সহায়তা করে
• শরীরের ওজন কমাতে সহায়তা করে
• অ্যান্টি-হাইপারগ্লাইসেমিক: এটি অগ্ন্যাশয় কোষের কার্যকলাপ, ইনসুলিন সংবেদনশীলতা এবং ইনসুলিন উৎপাদন ইমপ্রুভ করতে পারে। যা টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের চিকিৎসায় সহায়ক।
• অ্যান্টি-হাইপারটেনসিভ: স্টিভিওসাইড যৌগ রক্তনালীর এন্ডোথেলিয়াল কোষে ক্যালসিয়াম আয়নকে প্রবেশ করতে বাধা দিয়ে রক্তচাপ কমায় এবং হাইপারটেনসিভ রোগীদের রক্তনালী সংকোচন হ্রাস করে।
• অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: এতে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যার মধ্যে রয়েছে ওপিজেনিন, কেমফেরল এবং কুয়েরিট্রিন। এগুলো ডিএনএ স্ট্র্যান্ডের ক্ষতি প্রতিরোধে সহায়তা করে।
• অ্যান্টি-কার্সিনোজেনিক: স্টিভিওল গ্লাইকোসাইড চারটি উপাদান নিয়ে গঠিত। যথা- স্টিভিওসাইড, রিবাউডিওসাইড-এ, রিবাউডিওসাইড-সি এবং ডুক্লোসাইড-এ। এগুলো অ্যান্টি-কারসিনোজেন হিসেবে ১২-০-টেট্রাডেকানয়লফোরবোল-১২-অ্যাসিটেট (TPA) দ্বারা প্রদাহ সৃষ্টিকে দৃঢ়ভাবে বাধা দেয়।
• অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল: স্টেভিয়া সংক্রমণ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রাখে। ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার বংশবৃদ্ধি ঠেকায়।
• অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি: স্টেভিয়া প্রদাহ এবং ইমিউনো-মডুলেশন কমাতে সহায়ক। এটা কোষে প্রদাহ সৃষ্টিকারক এজেন্টগুলোর সংশ্লেষণ হ্রাস করে।
• কার্ডিওভাসকুলার অ্যাক্টিভিটি: স্টেভিয়ার কার্ডিওটোনিক অ্যাকশন মানুষের সংবহনতন্ত্রের ক্রিয়া উন্নত করতে সাহায্য করে।
• ডাইজেস্টিভ টনিক এক্টিভিটি: স্টেভিয়া ডাইজেস্টিভ সিস্টেমের উন্নতি ঘটায় এবং ক্ষুধা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
• ডার্মাটোলজিকাল অ্যাক্টিভিটি: স্টেভিয়াকে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার(যেমন- ব্রণ) একটি কার্যকর ওষুধ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। স্টেভিয়ার নিয়মিত ব্যবহার ত্বকের গঠন উন্নত করে এবং ত্বক ঝুলে যাওয়া প্রতিরোধ করে।
বাংলাদেশের আবহাওয়া ও মাটি স্টেভিয়া চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এদেশে সারা বছরই লাভজনকভাবে স্টেভিয়া চাষ করা সম্ভব। বৃষ্টির পানি জমে না এরকম জৈব পদার্থযুক্ত লাল ক্ষারীয় মাটিতে স্টেভিয়া ভালো জন্মে। হেক্টরপ্রতি ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার কেজি শুকনো পাতা উৎপাদন হয়। ভারতে বিভিন্ন কোম্পানি চাষীদের চুক্তিভিত্তিক চারা সরবরাহ করে এবং তাদের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্যে স্টেভিয়া পাতা কিনে নেয়। আমাদের দেশে বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলে একই পদ্ধতিতে তামাক চাষ করা হয়। ক্ষতিকর তামাক চাষের পরিবর্তে ঐ অঞ্চলে স্টেভিয়া চাষ হতে পারে।
বাসাবাড়িতে সহজেই স্টেভিয়া চাষ করা যায়। সারা বছরই বাড়ির বারান্দায় বা ছাদে টবে স্টেভিয়া চাষ করা সম্ভব। বাংলাদেশে বিএসআরআইয়ের বিজ্ঞানীরা উদ্ভিদটি নিয়ে কাজ শুরু করেছেন ২০০১ সালে। বায়োটেকনোলজি বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. কুয়াশা মাহমুদ জানান, "ঔষধি উদ্ভিদ স্টেভিয়া সহজে চাষ করা যায়। টবেও চাষ করা যায়। বাংলাদেশের যেকোনো এলাকায় এর চাষ সম্ভব। একবার লাগালে তিন থেকে চার বছর নতুন করে চারা লাগানোর প্রয়োজন পড়ে না। স্বল্প শ্রম ও খরচে স্টেভিয়া উৎপাদন হয়।"
তথ্যসূত্র:
৭। সায়েন্স ডাইরেক্ট
৮। ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেক ইনফরমেশন
১০। cancer.gov

إرسال تعليق

0 تعليقات