( বর্তমানে নোভেল করোনা ভাইরাসের আক্রমণে সারা পৃথিবী দিশাহীন অবস্থায়। এখনো কোন পরীক্ষিত ঔষধ পাওয়া যায়নি। চিকিৎসা বিজ্ঞানের সমস্ত শাখা এর জন্য ব্যতিব্যস্ত। এমতাবস্থায় হোমিওপ্যাথীর চিকিৎসক ডাঃ প্রদ্যোৎ কুমার হাজরা একটি মূল্যবান আলোচনা করেছেন। তিনি যেহেতু অন্যান্য হোমিও বিশেষজ্ঞদের এই বিষয়ে আলোচনায় অংশগ্রহণ করে করোনা প্রতিরোধে মতামত চেয়েছেন তাই এর গুরুত্ব অনুধাবন করে তাঁর আলোচনাটি আমাদের আন্তরজালে প্রকাশ করলাম ডাঃ মহাশয়ের বিনা অনুমতিতে )
স্বভাবতই সাধারন মানুষ এবং অনেকেই আমাদের কাছে প্রশ্ন করছেন, " আপনারা কিছু কি ভেবেছেন "?
অর্থাৎ তাঁরা জানতে চাইছেন যে আমাদের- অর্থাৎ হোমিওপ্যাথিতে এই অবস্থায় কোনো প্রতিষেধক ওষুধ বা কিছু করণীয় আছে কি না।
এ ব্যাপারে আমার কিছু ভাবনা আমার সতীর্থ হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার বন্ধুদের কাছে শেয়ার করে সাজেশন হিসেবে রাখতে চাই এবং এ ব্যাপারে তাদেরও অভিমত প্রত্যাশা করি,যাতে এই মারন ব্যাধিকে পৃথিবীর থেকে মুক্ত করতে আমরাও একটি সদর্থক ভূমিকা পালন করতে পারি ।
করোনা ভাইরাস কি-
অন্যান্য করোনা ভাইরাসের থেকে নভেল 2019-20 করোনা ভাইরাসের
মূল পার্থক্যটি কি-
অর্থাৎ তাঁর আকৃতি, প্রকৃতি, তাঁর সংক্রমণের পদ্ধতি এবং শরীরের কোন, কোন,স্থানে তাঁর প্রাথমিক লক্ষণ প্রকাশ পায় এবং পরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে সংক্রমিত হয়ে সে কত তাড়াতাড়ি ব্যাপ্তিলাভ কোরে কি কি পরিবর্তন ঘটায়- (Pathological changes) ,
আর তাঁর ফলে অবশেষে শরীরের সমস্ত সিস্টেমকে কিভাবে অকেজো করে কি ধরনের সংকট তৈরি করে-Multi Sytem Failure এর দিকে যায়, এবং এ ব্যাপারে অন্যান্য করোনা ভাইরাসের থেকে তাঁর স্বাতন্ত্র্যতা- এটা এতদিনে আপনাদের কাছে প্রায় কারোরই অজানা নয়। সেজন্যই আমি ঐ আলোচনায় যাওয়ার প্রয়োজন আর এখানে আছে বলে মনে করি না।
মূল পার্থক্যটি কি-
অর্থাৎ তাঁর আকৃতি, প্রকৃতি, তাঁর সংক্রমণের পদ্ধতি এবং শরীরের কোন, কোন,স্থানে তাঁর প্রাথমিক লক্ষণ প্রকাশ পায় এবং পরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে সংক্রমিত হয়ে সে কত তাড়াতাড়ি ব্যাপ্তিলাভ কোরে কি কি পরিবর্তন ঘটায়- (Pathological changes) ,
আর তাঁর ফলে অবশেষে শরীরের সমস্ত সিস্টেমকে কিভাবে অকেজো করে কি ধরনের সংকট তৈরি করে-Multi Sytem Failure এর দিকে যায়, এবং এ ব্যাপারে অন্যান্য করোনা ভাইরাসের থেকে তাঁর স্বাতন্ত্র্যতা- এটা এতদিনে আপনাদের কাছে প্রায় কারোরই অজানা নয়। সেজন্যই আমি ঐ আলোচনায় যাওয়ার প্রয়োজন আর এখানে আছে বলে মনে করি না।
এখানে বলে রাখা ভাল যে গত ডিসেম্বরের 2019এর আগে সারা পৃথিবীর কোনো ডাক্তারের কাছে এই বিশেষ অসুখটির পরিচিতি মনে হয় ছিল না বা কেউই এ ধরনের রুগি দেখেন নি। ভারতবর্ষেও, গত দেড় মাস আগে পর্যন্তও এটা স্বাভাবিক কারনেই, অপরিচিতই ছিল।
স্বভাবতই হোমিওপ্যাথিক কোনো ডাক্তারও এই অসুখ বা রুগির সম্মুখীন যে হননি এটা নির্দ্বিধায় বলা যায় ( অন্ততঃ আমি যতটুকু খবর রাখি)। আবার এটাও সত্য যে নভেল করোনা '19-'20 ভাইরাস এর সামগ্রিক চরিত্র সম্পর্কে সমস্ত কিছুই চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা জেনে গেছেন এমনটাও নয়, কারন এটাও বলা হচ্ছে যে ভাইরাসটি বারবার তাঁর জেনেটিক চরিত্রও পাল্টাতে সক্ষম এবং প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো নতুন আবিষ্কৃত তথ্য এই ব্যাপারে আমাদের কে সমৃদ্ধ করছে।
কিন্তু তাঁর আক্রমনের কেন্দ্রবিন্দু, সংক্রমনের ধারা এবং ভয়াবহ পরিণাম সম্পর্কে সবাই একমত।
তাহলে আমরা হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারদের করণীয় কি হবে এটাই মুখ্য আলোচনার বিষয়বস্তু ।
আমার দুটি বক্তব্য রাখতে চাই।
1. প্রথমটি কেন্দ্রীয় এবং বিভিন্ন রাজ্য সরকারের কাছে-
যেখানে এই বিশ্ব মহামারী কে মোকাবিলার জন্য যে মেডিক্যাল টিম তৈরি হয়েছে সেখানে চিকিৎসা বিজ্ঞানের সমস্ত শাখার প্রতিনিধিরা থাকুন(Allopathy, Homoeopathy, Unani, Ayrvedic) -সাথে প্যাথোলজিষ্ট, ভাইরোলোজিষ্ট,মাইক্রোবায়োলজিষ্ট জেনেটিক বিজ্ঞানীরাও। সবাইকেই এই মহামারী মোকাবিলায় সামগ্রিক চিন্তা ভাবনার নির্যাস আদান প্রদানের মাধ্যমে চিকিৎসায় সামিল করা হোক। এবং গ্রামীণ স্তর পর্যন্ত প্রয়োজনীয় ইনফ্রাস্ট্রাকচার গড়ে তোলা হোক, এলাকা ভিত্তিক সন্দেহভাজন অসুস্থ মানুষকে নিঃখরচায় প্রয়োজনীয় কমিউনিটি স্ক্রিনিং করা হোক। ডাক্তার, নার্স, প্যারামেডিক্যাল স্টাফদের যারা ফ্রন্টলাইনে কাজ করছেন তাঁদের প্রয়োজনীয় পারসোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপেন্ট সুনিশ্চিত করা হোক। সমস্ত হোমিওপ্যাথিক এবং আয়ুর্বেদিক হসপিটালে কোয়ারানটাইন সেন্টারের পরিপূরক ইনফ্রাস্ট্রাকচার তৈরি করে হোমিওপ্যাথিক এবং আয়ুর্বেদিক ডাক্তারদেরও এই যুদ্ধে সামিল করা হোক।
2. আপনারা সবাই জানেন হোমিপ্যাথিতে মহামারী মোকাবিলায় আমাদের শিক্ষক এবং হোমিওপ্যাথির আবিষ্কারক ডাক্তার স্যামুয়েল হ্যানিম্যানের শিক্ষা অনুযায়ী সেই অষ্টাদশ শতাব্দী থেকে আজ পর্যন্ত এক গৌরবময় ভূমিকা পালন করে এসেছে অন্যান্য প্রচলিত চিকিৎসা ব্যবস্থার থেকেও।
নভেল করোনা ভাইরাস '19-20 কে মোকাবিলায় আজ আমাদেরও তাই প্রতিরোধের জন্য এখনই একটি "জেনাস এপিডেমিকাস "বা হোমিওপ্যাথিক ওষুধের সুনির্দিষ্ট প্রটোকল সবার সামনে রাখা প্রয়োজন বলে মনে করি ।
কিন্তু মুশকিল এটাই যে আমরা কেউই এই রুগি দেখিনি । শুধু এই রোগের লক্ষণ শুনেছি, তাঁর ব্যাপকতা, তীব্রতা, প্যাথোলজি, মর্টালিটি, সিকোয়েলি জেনেছি । সেটাই ভিত্তি করে যদি লক্ষণগুলিকে প্রাথমিক ভাবে যদি সংক্ষেপে সাজানো যায়-
শুরু এরকমই ,
------------------
সর্দি, কাশি, গলা ব্যথা,হাঁচি, জ্বর
অর্থাৎ শ্বাসযেন্ত্রর উপর অংশের প্রদাহ ( Upper Respiratory Tract Infection)
------------------
সর্দি, কাশি, গলা ব্যথা,হাঁচি, জ্বর
অর্থাৎ শ্বাসযেন্ত্রর উপর অংশের প্রদাহ ( Upper Respiratory Tract Infection)
তারপরেই
-------------
-------------
প্রচন্ড শুকনো কাশি, উচ্চমাত্রায় জ্বর এবং প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট অর্থাৎ ( Lower Respiratory Infection)
যেখানে নিউমোনাটিস থেকে অতি দ্রুত ফুসফুসে ফাইব্রোসিস হচ্ছে ।
পরে অন্ত্রে, প্লীহা তে, কিডনি এবং আনুষঙ্গিক অনেক জায়গায় এর দ্রুত ব্যাপ্তি হয়ে , পরিণতিতে মালটি সিস্টেম ফেলিওর । এর কারণগুলো আপনারা জানেন বলেই বিস্তারিত আলোচনায় গেলাম না।
এখানে প্রশ্ন হল আমরা এটা প্রতিরোধ করার জন্য ওষুধ বা "জেনাস এপিডেমিকাস" ঠিক করব কি করে।
আমরা রুগি দেখিনি।
দেখার সুযোগ না হওয়া পর্যন্ত কি আমরা অপেক্ষা করব। ততদিনে যদি দেশ উজাড় হয়ে যায়, আমরা কি চুপচাপ বসে মৌন হয়ে থাকব। রুগি না দেখেও কোনো ডাক্তার যদি তাঁর অভিজ্ঞতা দিয়ে কোনো একটি বিশেষ রোগের বিশেষ অবস্থাকে সমস্ত দিক দিয়ে ( Disease Condition)খুঁটিয়ে, খুঁটিয়ে, পর্যবেক্ষনের মাধ্যমে এবং সামগ্রিক লক্ষণগুলি ও তাঁর তথ্যগুলিকে ক্রিটিক্যালি এবং এনালিটিক্যালি দেখে, মূল্যায়ন করে, সুনির্দিষ্ট ওষুধের কথা ভাবেন এবং এই বিচারপদ্ধতি যদি একটি বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির বুনিয়াদ হয়, তবে আমি মনে করি আমরা এই মহামারীর প্রতিষেধক- "জেনাস এপিডেমিকাস" এর ভিত্তিতেই এই মহামারী কে প্রতিরোধ করার একটি প্রোটোকল তৈরি করতে পারি ।
এটা একবিংশ শতাব্দী বলেই এটা সম্ভব বলে মনে করি ।
এটা প্রতিরোধের জন্য
-------------------------------
আমি ব্যক্তিগতভাবে তিনটি ওষুধের কথা ভেবেছি।
বিশেষতঃ তাঁদের জন্য -
1) যারা এখনও সুস্থ আছেন
2) যারা এই মুহূর্তে সিজনাল সর্দি কাশিতে ভুগছেন
3) যারা এই ভয়াবহ অসুখের হয়তো ইনকিউবেশন পিরিয়ডের মধ্যে আছেন বলে মনে হচ্ছে
4) যারা কোয়ারানটাইনে আছেন
-------------------------------
আমি ব্যক্তিগতভাবে তিনটি ওষুধের কথা ভেবেছি।
বিশেষতঃ তাঁদের জন্য -
1) যারা এখনও সুস্থ আছেন
2) যারা এই মুহূর্তে সিজনাল সর্দি কাশিতে ভুগছেন
3) যারা এই ভয়াবহ অসুখের হয়তো ইনকিউবেশন পিরিয়ডের মধ্যে আছেন বলে মনে হচ্ছে
4) যারা কোয়ারানটাইনে আছেন
Adult Dose
----------------
1.Natrum Sulph -1m
প্রথম দিন
সপ্তাহে একবার করে পর পর তিন সপ্তাহ
2. Kali Carb-1m
পরের দিন
সপ্তাহে একবার করে পর পর তিন সপ্তাহ
3. Drosera -200
তৃতীয় দিন
সপ্তাহে একবার করে তিন সপ্তাহ
----------------
1.Natrum Sulph -1m
প্রথম দিন
সপ্তাহে একবার করে পর পর তিন সপ্তাহ
2. Kali Carb-1m
পরের দিন
সপ্তাহে একবার করে পর পর তিন সপ্তাহ
3. Drosera -200
তৃতীয় দিন
সপ্তাহে একবার করে তিন সপ্তাহ
For children
------------------
একই ওষুধ একইভাবে 30 শক্তির
------------------
একই ওষুধ একইভাবে 30 শক্তির
আমি শুধুমাত্র একটি মূল্যায়ন রাখলাম। আমার সতীর্থ বন্ধুদের মতামত পেলে উপকৃত হবো।
অবশ্য এর সাথে এই অসুখ সম্পর্কে প্রাথমিক যে সাবধানতা সকলের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য সেটা অবশ্যই গুরুত্বসহকারে মেনে চলতেই হবে।
Social distancing, hygiene etc.
-----------------------------
প্রদ্যোৎ কুমার হাজরা
Social distancing, hygiene etc.
-----------------------------
প্রদ্যোৎ কুমার হাজরা